সো আমরা জানি, আমাদের মন এবং শরীর একটার সাথে আরেকটা ডিপলী কানেক্টেড । আমাদের মন বা মস্তিষ্ক নার্ভাস সিস্টেম বা স্নায়ুতন্ত্রের সাহায্যে আমাদের শরীরের সাথে যুক্ত থাকে । আর এই নার্ভাস সিস্টেমের একটা নার্ভ হয়লো ‘Vagus Nerve’ তো, এই নার্ভ টাকে কন্ট্রোল করে কিভাবে আপনি আপনার মনকে যেকোনো অবস্থাতে শান্ত রাখতে পারেন এবং রিল্যাক্স ফিল করতে পারেন সেইটা নিয়াই আজেকের এই হাবিজাবি লেখা…(আই প্রমিস, ইট উইল হেল্প)
আমাদের মস্তিষ্ক নার্ভাস সিস্টেম এবং হরমোনের মাধ্যমে আমাদের শরীরকে নিয়ন্ত্রণ করে, আর এই নার্ভাস সিস্টেমের দুইটা পার্ট আছে । এর মধ্যে একটা যেইটা আমরা নিজেরাই নিয়ন্ত্রণ করতে পারি যাকে বলা হয় ‘সোমাটিক নার্ভাস সিস্টেম‘ লাইক আমরা হাত পা নাড়তেছি, লিখতেছি, খাইতেছি এগুলা । আরেকটা হলো ‘অটোনমি নার্ভাস সিস্টেম‘ লাইক আমাদের হার্ট রেইট, নিঃশ্বাস প্রশ্বাস, ডাইজেশন ইত্যাদি, আর এটা আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারিনা । আবার এই অটোনমি নার্ভাস সিস্টেমের দুইটা পার্ট আছে, একটা হলো ‘সিমপ্যাথেটিক‘ আরেকটা হলো ‘প্যারাসিমপ্যাথেটিক‘ ।
আমরা যখন কোনো নেগেটিভ ইমোশনের মধ্যে দিয়া যায় তখন আমাদের সিমপ্যাথেটিক নার্ভাস সিস্টেম এক্টিভেট হয় যার ফলে আমাদের হার্ট রেইট বেড়ে যায়, অস্থিরতা, ঘেমে যাওয়া, প্রস্রাবের বেগ আসা এমন প্রতিক্রিয়া তৈরি হয় । অন্যদিকে এর সম্পূর্ণ উল্টা টা হয়লো প্যারাসিমপ্যাথেটিক । এইটা যখন এক্টিভেট হয় তখন আমরা শান্ত, রিল্যাক্স ফিল করি এবং এক ধরনের প্রশান্তি অনুভব করি । আর এইটা হয় প্যারাসিমপ্যাথেটিক নার্ভাস সিস্টেমের একটা নার্ভ ‘ভেগাস নার্ভ‘ এর কারনে । তো, কোনো উপায়ে যদি এই ভেগাস নার্ভ কে এক্টিভেট করতে পারি তাহলে আমরা নিজেদেরকে যেকোনো অবস্থাতেই অনেকটা শান্ত বা রিল্যাক্স রাখতে পারবো । তো আসেন, এইটা এক্টিভেট করার কয়েকটা সহজ টেকনিক শিখায় দেই…
১) Breath Control : ভেগাস নার্ভ কে এক্টিভেট করার অন্যতম একটা উপায় হয়লো শ্বাস প্রশ্বাস এর নিয়ন্ত্রণ করা । আমরা যখন শ্বাস নেই তখন আমাদের সিমপ্যাথেটিক নার্ভাস সিস্টেম এক্টিভেট হয়, আবার যখন শ্বাস ছেড়ে দেই অথবা বন্ধ করে রাখি তখন প্যারাসিমপ্যাথেটিক নার্ভাস সিস্টেম এক্টিভেট হয় । তো এই টেকনিকে আপনাকে শ্বাস নেওয়ার সময় অপেক্ষা ছাড়ার সময়টাকে একটু দীর্ঘ করতে হবে । বুঝতে সমস্যা হচ্ছে? অনুশীলন দেখাই দিতেছি ..
- অনুশীলন: ৪ সেকেন্ড ধরে শ্বাস নিন, ৫ সেকেন্ড ধরে শ্বাস ছাড়ুন, এরপর কিছু সময় শ্বাস ধরে রাখুন, এভাবে বেশ কয়েকবার রিপিট করুন ।
২) Diving Reflex & Ice : এই পদ্ধতিতে মূলত ঠান্ডা জাতীয় (বরফ, পানি) শরীরের স্পেসিফিক কিছু জায়গায় ব্যবহার করে ভেগাস নার্ভ কে এক্টিভেট করা হয় । আমাদের শরীরের স্পেসিফিক কিছু জায়গায় ভেগাস নার্ভ বেশি থাকে লাইক মুখমন্ডল, গলা, ঘাড়, কপালের পাশে ইত্যাদি । খেয়াল করলে দেখবেন, ঠান্ডা পানীতে ঝাঁপ দেওয়ার সময় অথবা শীতের সময় ঠান্ডা পানীতে গোসলের সময় প্রথমবার পানি ঢালার পর মনে হয় হার্ট বন্ধ হয়ে আসতেছে, তখন মূলত ভেগাস নার্ভ এক্টিভেট হয় । ভেগাস নার্ভ এর পাশাপাশি Trigeminal নামে একটা নার্ভ যেইটা মুখমন্ডল এ বেশি থাকে, যা রাগ কমাতে অনেকটা সাহায্য করতে পারে । রেগুলার ঠান্ডা পানি বা বরফ মুখে অথবা স্পেসিফিক যে জায়গা গুলো বললাম সেগুলাই ব্যবহার করলে দেখবেন আপনার ভেগাস নার্ভ এক্টিভেট হয়ে উঠবে এবং আপনি অনেকটাই রিল্যাক্স ফিল করবেন ।
৩) Valsalva Maneuver : এইটা খুবই সিম্পল একটা টেকনিক, এর লাইগা তিনটা স্টেপস ই যথেষ্ট..
- স্টেপ ১:– প্রথমে লম্বা একটা শ্বাস নেন ।
- স্টেপ ২:– এবার আপনার হাতের আঙুল দিয়ে নাকের উভয় ছিদ্র চাপ দিয়ে রাখুন ।
- স্টেপ ৩:– এখন এভাবে শ্বাস ছাড়ার চেষ্টা করুন, স্বাভাবিক ভাবেই আপনার নাক মুখ বন্ধ থাকায় শ্বাস বের হতে চাইবেনা তবে লক্ষ্য রাখবেন এসময় যেন আপনার পেট ফুলে আসে । এভাবে ১৫ সেকেন্ড করে ৩ মিনিট ধরে করেন । এরকম করলে দেখবেন খুব ভালোভাবেই ভেগাস নার্ভ টি এক্টিভ হয়ে গেছে এবং আপনি খুবই রিল্যাক্স এবং প্রশান্তি অনুভব করতেছেন ।
তো এই ছিল বেশ কয়েকটি টেকনিক যেগুলা প্যারাসিমপ্যাথেটিক নার্ভাস সিস্টেমের অংশ ভেগাস নার্ভ কে এক্টিভেট করতে খুবই কার্যকরী এবং প্র্যাকটিক্যালী প্রোভেন ।
ভেগাস নার্ভ সহ আরো এডভান্সড এবং স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট এর সম্পূর্ণ গাইডলাইন খুব সহজ এবং সুন্দর ভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে “The SYNARA Method” বইতে ।